ইসলামি বই কেনো জরুরী?

পশ্চিমারা সেই সভ্যতার শুরু থেকেই ভারতবর্ষের এতো সুন্দর আধ্যাত্মিকতার মূল্যায়ণ এর প্রতি আকৃষ্ট ছিলো। কেনো? তাদের তো প্রগতি আর উন্নতির অভাব ছিলোনা। তবুও তারা সবকিছু অর্জন করেও এক দুটানায় ভুগতো, খুঁজতো আত্মার খোরাক দিক্বিদিক। একইভাবে আজ সমাজের যুবক শ্রেণী থেকে শুরু করে অধিকাংশের দিকে তাকালে দেখা যায়, তারা ডিপ্রেশন, মনোরোগ থেকে শুরু করে আত্মহত্যার মধ্যে হাবুডুবু খেয়ে যাচ্ছে। দুনিয়ার অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতার আড়ালে নিজেকে মিথ্যা সুখী দেখায়।

এগুলো থেকে বাঁচার জন্যও খুঁজে আরো কিছু ভুল পথের ইশারা। কিন্তু কোথাও সেই শান্তির স্বাদ খুঁজে পায়না কেনো? সহজ উত্তর হলো আমাদের যুবক শ্রেণীরা ঠিক পশ্চিমাদের সেই মিথ্যা প্রগতির দিকেই ছুটছে। পশ্চিমাদের আদলে তৈরি হয়েছে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা, কিন্তু তাতে নেই বিবেক এবং ভাববাদের কোন রস, আমরা হয়ে উঠছি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা, প্রকৃত ভালো এবং মন্দ যাচাই করার ক্ষমতাহীন ঘুমন্ত এক জাতি। অথচ যারা ভোগবাদী, তারা নিজেকে কখনোই চিনতে পারেনা, যতোই দিক বেদিক ছুটুক, নিজের চাহিদা দমাতে না পারলে নিজের ক্বলব বা আত্মার প্রকৃত পরিচিতি থেকে লুকিয়ে রাখে।

সুতরাং, সমসাময়িক সংকটের মধ্যে আমাদের দু’টি প্রধান বাধা হলো আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক পরাজয় আর মু’মিন হিসেবে আমাদের অগ্রাধিকার বাছাইকরণে অনীহা প্রকাশ। আমাদের কাছ থেকে লুকানো হয়েছে আমাদের আত্মিক বুনিয়াদের উপকরণ, বরং তাতে দেওয়া হয়েছে বাহারি মিথ্যার তাক লাগানো প্রলেপ। যা পুনরুত্থান করতে পারলে আমরা খুঁজে পাবো আমাদের নিজস্ব মূল্যবোধ থেকে বিজয়-ফেরির সিলসিলা। এর জন্য আমাদের প্রথম হাতিয়ার হবে নিজেদের শেকড়কে শক্ত করা। ইসলামের পূূর্বপুরুষদের সেই পুরনো সময়ের ইতিহাস, বিশ্বাস, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান এবং আমলকে জানা। যার জন্য আমাদের ইসলামি বইয়ের প্রতি মনোযোগি হওয়া খুবই জরুরি।

বই একদিকে যেমন জ্ঞানের উৎস, অন্যদিকে জ্ঞান সংরক্ষণের প্রাথমিক মাধ্যম। বই পড়ার মাধ্যমে উন্মোচিত হয় জ্ঞানের রাজ্যের নতুন নতুন দিগন্ত। তাই হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হোক আবার নতুনভাবে। দেড় হাজার বছরে গড়ে ওঠা ইসলামের সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে। অথচ আমাদের পড়ার অভ্যাস একদম চলে গেছে। বইয়ের সঙ্গে সব ধরনের সংযোগ যেন দুর্বল ও ম্রিয়মাণ হচ্ছে দিন দিন। অধিকাংশ মুসলিমের কাছে বই পড়া আজ হারিয়ে যাওয়া এক অভ্যাস। কিন্তু ঠিকই প্রতিদিন ফেসবুকে এমন কিছু পড়ছি যা ঈমান দুর্বল করে দিচ্ছে। দুনিয়াবি আড্ডা, গান-বাজনা থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় দিচ্ছি কেবলই অপ্রয়োজনীয় সকল বিষয়ে। এতে আমাদের আত্মার ক্ষিদা থেকে যাচ্ছে এবং একসময় আত্মাগুলো মারা যাচ্ছে। বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে এমন লোকের সংখ্যা মুসলিম বিশ্বে দিন দিন কমছে। তাই মুসলিম হিসেবে আমাদের এবং পরিবারের সদস্যের জন্য ঘরের বুক সেলফে কিছু বই সবসময় রাখা উচিত। যে বইগুলো প্রতিটা মুসলিমের পড়া উচিত।

ইসলামি সভ্যতা জুড়েই দেখা যায়, বই পড়াকে ইসলাম বরাবরই সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে। ইসলামের শুরু থেকেই বইয়ের সঙ্গে মুসলমানদের সুশৃঙ্খল সংযোগ ছিল। জনৈক পশ্চিমা লেখক বলেছেন, “জ্ঞানের ধারণা ইসলামে অর্জন করেছিল অনন্য এক সাফল্য। অতীতের সেই সাফল্য ছিল যথাযথ। আর এই সাফল্য অর্জন হয়েছিল অনবরত বইয়ের মধ্যে বুঁদ হয়ে থেকে এবং বৈচিত্র্যময় সব বই থেকে স্বাদ নেওয়ার মাধ্যমে। যেসব বইয়ের মধ্যে এমন অনেক বইও ছিল, যেগুলো ইসলামি বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বিপরীত।”

বর্তমানে ইসলামী সাহিত্য অঙ্গনের স্বর্ণযুগ চলছে। বলাই বাহুল্য ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ইসলামী বইয়ের পাঠক সংখ্যা। এর প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে ইসলামিক বইমেলাতে কচিকাঁচা এবং যুবকদের লক্ষণীয় আনাগোনা। তরুণ ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত প্রজন্মের মধ্যে বাড়ছে ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ। বাংলা ভাষায় ইসলামী বইয়ের ভান্ডারও সময়ের চাহিদায় প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ হচ্ছে।
ইসলামী পুনর্জাগরণের জন্য উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্বটা বোঝা জরুরী। পাশ্চাত্যের অনেক ত্রুটিপূর্ণ ও ইসলামবিরোধী ডগমা মজবুত আসন গেড়ে বসেছে রাষ্ট্র-সমাজ থেকে শুরু করে আমাদের মন, মগজ ও চিন্তারাজ্যে। এছাড়াও নিজের ঈমান, আক্বিদা, ইলম এবং আমলের সঠিক ধারণা ও নির্যাস পেতে কোরআন, হাদিসের পাশাপাশি ইসলামি বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। আর সকল ধরণের ইসলামিক বইগুলো সহজেই পেতে যোগাযোগ করুন দারসুল হিকমাহ বুকস্টোরে। যেখানে পাবেন ইসলামিক ইতিহাস, সিরাহ, দাওয়াহ, কর্মপন্থা, উসুল, ইলম, আমল, আত্মশুদ্ধি সহ নানান ক্যাটাগরির ইসলামিক বই।

Main Menu