ইসলাম কেন সব সময় এবং সব যুগের?

কিছু কিছু মুসলিম-অমুসলিম ভাইবোনেরা মাঝে মাঝে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন যে, কেন এবং কিভাবে ইসলাম এত বছর একইভাবে টিকে আছে? আবার অনেকে বলে যে ইসলামকে কেন সবসময় এবং সব যুগের বলা হয়? আজ আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।

এই মুহূর্তে আমরা লক্ষ্য করলে দেখব যে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলিম, শহরের প্রতিটি কোনায় কোনায় মসজিদ রয়েছে। ‌যার জন্য বাংলাদেশের ঢাকাকে মসজিদের শহর বলা হয়। ইসলাম হলো পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম এবং বর্তমানে পৃথিবীর ২৪.৯% জনগোষ্ঠী মুসলিম।সৃষ্টির চোদ্দোশ বছর পরেও ইসলামের সম্মান ও প্রচার এক বিন্দুও কমেনি।

ইসলাম হাজার হাজার বছর ধরে একই ভাবে টিকে থাকার জন্য অন্যতম দুটি কারণ হলো:-

১. সহি শুদ্ধ কিতাব।

২.মহানবী সা. এর মহান ব্যক্তিত্ব এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবহার।

ইসলাম কেন সব সময় এবং সর্বযুগের এটা বুঝতে হলে আমাদের চলে যেতে হবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে। ৬১০ সালের পর থেকে আমৃত্যু মহানবী সা. ইসলামের জন্য কাজ করেছেন। তার আপ্রাণ চেষ্টায় অতি অল্প সময়ে ইসলাম পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। অতি দ্রুত ইসলাম ছড়ানোর কারণ হলো: বড় বড় যুদ্ধ জয়, মানুষের জন্য নির্দেশিত ব্যবহারের উদাহরণ এবং সে সময়কার ছড়িয়ে পড়া বাণিজ্য।

বিস্তারিত:

. সহি শুদ্ধ কিতাব

আল্লাহ তায়ালা হতে বর্ণিত কোরআন শরীফের আয়াত এবং মহানবী সা. এর বর্ণিত হাদিসকে পাথরে অথবা পাতায় লিখে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা হয়। নবীজী সঃ এর মৃত্যু ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হওয়ার পরেও ইসলামের চার খলিফা কুরআন শরীফ, হাদিস এবং ইসলামকে প্রচারের কাজ করেন।

ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর রা. সর্বপ্রথম কুরআন শরীফ সংকলন করেন। পরবর্তীতে বহু বছরে মানুষের মুখে মুখে কুরআন এবং হাদীসের বিকৃতি ঘটতে থাকায় ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান রা. কোরআন শরীফ সংরক্ষণের জন্য পুনরায় তৎপরতা শুরু করেন। তিনি সার্থক এবং শুদ্ধভাবে কুরআন সংকলন করে তা তার কপি বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়ে দেন। এভাবেই বিশুদ্ধ কোরআন শরীফের কপি বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। পরবর্তীতে হাদিসকেও বই আকারে সংরক্ষণ করা হয়। তার ফলে হাজার বছর পরেও আমরা সহি শুদ্ধভাবে কুরআন হাদিস পড়তে পারছি এবং সঠিকভাবে ইসলামের চর্চা করছি।

২.মহানবী সা এর মহান ব্যক্তিত্ব এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবহার

৫৭০ খ্রিস্টাব্দের জন্ম নেওয়া হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম চিরকালের শ্রেষ্ঠ মানব। ছোটবেলা থেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নবীজি সুন্দর ব্যবহারের দৃষ্টান্ত দিয়ে গেছেন। তার পরম শত্রুরাও কখনো তার স্বভাব এবং চরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য করতে পারেননি। মহানবী সঃ এর দয়ালু এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের সুনাম এখনো পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। তিনি তার সর্বোচ্চ দিয়ে ইসলামকে শীর্ষ স্থানে পৌঁছাতে পেরেছিলেন।মহানবী সাঃ. তার ধৈর্য এবং ব্যবহার দিয়ে হাজারো মানুষের মনে ইসলামকে গেথে দিয়েছেন। প্রতিটি যুদ্ধে মহানবী সা. ক্ষমার সর্বোচ্চ উদাহরণ আমাদের জন্য রেখে গিয়েছেন। নিজের জীবনের পরোয়া না করে তিনি ইসলামকে প্রচার করে গিয়েছেন, তাই তাকে ইসলামের সর্বোচ্চ সম্মানের স্থান দেওয়া হয়েছে। অনেক ধন সম্পদ থাকার সত্বেও নবিজী তা উপভোগ করেননি, তিনি তার গরিব দুঃখীদের দান করে দিয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ সঃ কে আদর্শ মানব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন যেন আমরা তাকে অনুসরণ করে ভালো মানুষ হতে পারি। নবীজী আমাদের সমান অধিকার, শান্তি ও ত্যাগের মহিমা সম্পর্কে শিক্ষা দেন। তার ভালো গুণগুলো অনুসরণ করলেই কেউ কোনদিন বিপথগামী হতে পারবে না।

এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে ইসলাম সব সময় এবং সর্বযুগের কারণ সর্বদা কুরআন শরীফ এবং নবীজির আদর্শ বিদ্যমান ছিল। পবিত্র কোরআন শরীফ চর্চার মাধ্যমে মানুষ সর্বদা সঠিক জ্ঞান ও শিক্ষা পেয়েছে এবং হাজার বছর পরও একইভাবে ইসলামকে চর্চা চলছে। অন্যদিকে মহানবী (সাঃ) ইসলামের শিক্ষাও সবাইকে সঠিক পথে থাকতে সাহায্য করছে। ইসলামের অস্তিত্ব থাকবে শেষ দিন পর্যন্ত।

তবে এইসব গুরুত্বপূর্ণ জটিল বিষয় বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই কোরআন ও হাদিসের বাহিরে অনেক বেশি বই পড়তে হবে, জানতে হবে। অনেকেই ভালো বই পাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। আপনি যদি তেমনি একজন হয়ে থাকেন, তাহলে ভালো মানের ইসলামিক বইগুলো সহজেই পেতে যোগাযোগ করুন দারসুল হিকমাহ বুকস্টোরে হটলাইন ০১৮৬৪৬৬৬৪২২। যেখানে পাবেন ইসলামিক ইতিহাস, সিরাহ, দাওয়াহ, কর্মপন্থা, উসুল, ইলম, আমল, আত্মশুদ্ধি সহ নানান ক্যাটাগরির ইসলামিক বই।

Main Menu