আত্মসচেতনতায় বই পাঠের গুরুত্ব!

সভ্যতার অগ্রগতির পাশাপাশি বিশৃঙ্খলা ক্রমশ বেড়ে চলছে। বিভ্রান্তির ছড়াছড়ি চারদিকে। মানুষে মানুষে কোন্দল; পরিবারে কোন্দল, আত্মীয়ে কোন্দল, সমাজে কোন্দল, ধর্মে কোন্দল‌, রাষ্ট্রে কোন্দল — শৃঙ্খলার চরম অবনতি সবখানেই। এত অরাজকতার মধ্যেও বেঁচে থাকতে হয় জীবনের তাগিদে।

এত বিশৃঙ্খলার সত্ত্বেও আমাদের চেষ্টা করতে হয় স্বাভাবিক জীবনে বাস করতে। এই স্বাভাবিক জীবন ধারণের জন্য অন্যতম সহায়ক বইপড়া তথা জ্ঞানার্জন। জ্ঞানার্জন ব্যতীত একজন মানুষের জীবনে কখনো পূর্ণতা কিংবা পরিপক্কতা আসে না, ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয় না। জীবসত্তা জাগ্রত থাকলেও মানবসত্তা জাগ্রত করার সিঁড়ি হচ্ছে বই পাঠ।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে নিম্নোক্ত আয়াত সমূহ কেন ইরশাদ করেছেন তা দেখা যাক–

এক. পড়ুন আপনার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। আর আপনার প্রভু অনেক সম্মানিত ও দানশীল। যিনি মানুষকে কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষকে এমন সব বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না। (সুরাতুল আলাক :১-৫)

দুই. ‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল আল্লাহকে ভয় করে।’ (সুরা ফাতির : ২৮)

তিন. ‘আর এসব দৃষ্টান্ত আমি মানুষের জন্য উপস্থাপন করি, আর জ্ঞানী লোকেরা ছাড়া কেউ তা বুঝে না।’ (সুরা আনকাবুত : ৪৩)

চার. ‘বল, যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে?’ (সুরা যুমার : ৯)।

উল্লেখিত আয়াত সমূহ বিবেচনা করলে আমরা বলতে পারি, আমাদের কোয়ালিটি ডেভেলপের জন্য আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াতগুলো নাযিল করেন। বই পড়া বা জ্ঞানার্জন করাটা উৎসর্গিত হতে হবে স্বয়ং স্রষ্টার জন্য। আপনি যদি আত্মসচেতন না হন আপনার অর্জিত জ্ঞান বিপথগামী হতে পারে। স্রষ্টার প্রতি উৎসর্গ করার মাধ্যমে দায়ভার মুক্ত হতে পারলেন। মানুষের বিবেককে হাতেখড়ি তিনি দিয়েছেন, এমন সব বিষয় জানিয়েছেন যা মানুষের জানার‌ কথা ছিলো না।

মানুষের জীবন সম্প্রসারণের সাথে যে জ্ঞান-ধারণার প্রয়োজন ছিলো তিনি তা দিয়েছেন। মানুষের এই জীবন যখন আরও সম্প্রসারিত হবে তখন আরও জ্ঞান-ধারণার দরকার হবে। যা মানুষকে আত্মসচেতন করে তুলবে, বিপদগ্রস্ত হতে বাঁধা প্রদান করবে। জ্ঞানই মানুষকে আল্লাহভীরু করে তোলে। আত্মসচেতন মানুষ তার স্রষ্টাকে চিনে। ফলে নিজেকে অকল্যাণ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে অনায়াসেই।

পবিত্র কুরআনে যেসব দৃষ্টান্ত রয়েছে, তা অনুধাবনের জন্যও জ্ঞানী হওয়া প্রয়োজন। আপনি কুরআন না বুঝলে কখনোই আত্মসচেতন হতে পারবেন না। যে জানে এবং যে জানে না এই দুই ব্যক্তি কখনোই সমান হতে পারে না, যে ব্যাপারে আল্লাহ নিজেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। জ্ঞানহীন ব্যক্তিটি নিজের ক্ষতি নিজেই সাধন করেছে।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ইলম অর্জনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনের অনেকগুলো নামের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘আল-কিতাব’ বা বই। সিরাতাল মুস্তাকিম বা সহজ সরল পথে জীবন পরিচালনা করার জন্য পড়াশোনার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। হিদায়াতের রাস্তা বোঝার অন্যতম উপকরণ জ্ঞানার্জন।

কাজেই এই ফিৎনা, ফাসাদ, অরাজকতা এবং বিশৃঙ্খলার সময়ে নিজেকে হিফাজতে রাখার জন্য জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই। নিজের কোয়ালিটি উন্নয়নের জন্য জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই। আর বই হচ্ছে এই জ্ঞানার্জনের অন্যতম মাধ্যম।

তবে, অনেকেই ভালো বই পাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। আপনি যদি তেমনি একজন হয়ে থাকেন, তাহলে ভালো মানের ইসলামিক বইগুলো সহজেই পেতে যোগাযোগ করুন দারসুল হিকমাহ বুকস্টোরে। যেখানে পাবেন ইসলামিক ইতিহাস, সিরাহ, দাওয়াহ, কর্মপন্থা, উসুল, ইলম, আমল, আত্মশুদ্ধি সহ নানান ক্যাটাগরির ইসলামিক বই।

Main Menu